Triangulum Galaxy
ট্রায়াঙ্গুলাম হচ্ছে একটি সর্পিল ছায়াপথ, যেটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২.৭৩ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে Triangulam নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত । এটিকে Messier 33 (M33) বা NGC (New General Catalouge) 598 হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে । এ ছায়াপথে একটি H II নিউক্লিয়াস রয়েছে । যদিও ছায়াপথের নিউক্লিয়াসে একটি অতিভারবিশিষ্ট কৃষ্ণ গহ্বর আছে বলে মনে হয় না । কারণ, একটি ছায়াপথের কেন্দ্রীয় অতিভারবিশিষ্ট কৃষ্ণ গহ্বরের ভর ছায়াপথের কেন্দ্রীয় স্ফীতির আকারের সাথে সম্পর্কযুক্ত । M33 বা ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ Andromeda Galaxy (অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথ) এবং Milky Way Galaxy (আকাশগঙ্গা ছায়াপথ) থেকে ভিন্ন । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ হচ্ছে একটি বিশুদ্ধ চাকতি ছায়াপথ যার কোনো স্ফীতি নেই । তবে, ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা Chandra X-ray Observatory থেকে তথ্য ব্যবহার করে এ ছায়াপথে সূর্যের ভরের প্রায় ১৫.৭ গুণ একটি কৃষ্ণ গহ্বর সনাক্ত করেন । M33 X-7 নামক কৃষ্ণ গহ্বরটি একটি সহচর নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে যা এটি প্রতি ৩.৫ দিনে গ্রহন (Eclipse) করে । জানা যায়, এটি সবচেয়ে বড় নাক্ষত্রিক ভরের একটি কৃষ্ণ গহ্বর । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথ এবং আকাশগঙ্গা ছায়াপথের পিছনে অবস্থিত ছায়াপথগুলোর স্থানীয় গোষ্ঠীর তৃতীয় বৃহত্তম সদস্য (যদিও ছোট-বড় এবং ছোট Magellanic মেঘগুলো আকাশগঙ্গার সাথে মুখোমুখি হওয়ার আগে সর্পিল হয়ে থাকতে পারে) এবং রাতের আকাশে তাদের মিথস্ক্রিয়া, বেগ ও একে অপরের নৈকট্যের কারণে এন্ড্রোমিডা ছায়াপথের একটি উপগ্রহ বা পরবর্তীতে এটির প্রত্যাবর্তন বলে মনে করা হয় । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ হচ্ছে প্রায় ৪০ বিলিয়ন নক্ষত্রের আবাসস্থল, যেখানে আকাশগঙ্গা ছায়াপথে ৪০০ বিলিয়ন এবং অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথে ১ ট্রিলিয়ন নক্ষত্র রয়েছে । স্কটল্যান্ডের ঔপন্যাসিক ও এডিনবার্গ সংবাদপত্রের প্রাক্তন সাহিত্য সম্পাদক Andrew Crumey দেখিয়েছেন যে, এ ছায়াপথের মোট আপাত দৃশ্যমান মাত্রা ৫.৭২ এবং কার্যকর দৃশ্যমান মাত্রা প্রায় ৬.৬ । ক্ষীণ আলো বা খুব অন্ধকার স্থান থেকেও এটিকে দেখা যায় । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথকে কখনো কখনো অনানুষ্ঠানিকভাবে Pinwheel Galaxy বলা হয় । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথটি সম্ভবত ১৬৫৪ খ্রিস্টাব্দের আগে ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী Giovanni Battista Hodierna আবিষ্কার করেন । ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫-২৬ আগস্ট রাতে ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী Charles Messier ছায়াপথটি স্বাধীনভাবে আবিষ্কার করেন এবং এটি তার Catalog of Nebulae and Star Clusters (1771) এ বস্তু নম্বর ৩৩ হিসেবে প্রকাশিত হয় । তাই ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথটির নাম Messier 33 (M33) । জার্মান-ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং সুরকার Frederick William Herschel ১১ই সেপ্টেম্বর ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে এ মহাজাগতিক বস্তুটিকে H V-17 হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন । ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে আইরিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রকৃতিবিদ এবং প্রকৌশলী Lord Rosse একটি ‘সর্পিল নীহারিকা’ (Spiral nebulae) এর মধ্যে ছায়াপথটি ছিল এটি তিনি প্রথম চিহ্নিত করেন । ১৯২২-২৩ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী John Charles Duncan এবং জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী Maximilian Franz Joseph Cornelius Wolf (Max Wolf) নীহারিকাতে পরিবর্তনশীল নক্ষত্র আবিষ্কার করেন । মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী Edwin Powell Hubble ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে দেখিয়েছিলেন যে, এ নক্ষত্রগুলোর মধ্যে ৩৫টি হচ্ছে Classical Cepheid । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ হচ্ছে স্থানীয় ছায়াপথ গোষ্ঠীর তৃতীয় বৃহত্তম সদস্য । এ ছায়াপথের ডি২৫ আইসোফোটাল ব্যাস ১৮.৭৪ কিলোপারসেক (৬১১০০ আলোকবর্ষ), যেখানে ছায়াপথ পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতা ২৫ম্যাগ/আর্কসেক২ এ পৌঁছায় এবং এটি শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ আকাশগঙ্গা ছায়াপথের আকারে পরিণত করে । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথটি অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথের মহাকর্ষীয়ভাবে আবদ্ধ সঙ্গী হতে পারে ।
ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ চাকতির আনুমানিক ভর (৩–৬)×১০৯ সৌর ভর, যেখানে গ্যাসের উপাদানটি প্রায় ৩.২×১০৯ সৌর ভর । সুতরাং, ছায়াপথের সমস্ত Baryonic পদার্থের মিলিত ভর ১০১০ সৌর ভর হতে পারে । ৫৫×১০৩ আলোকবর্ষ (১৭ কিলোপারসেক) ব্যাসার্ধে অন্ধকার পদার্থের (Dark matter) উপাদানের অবদান প্রায় ৫×১০১০ সৌর ভরের সমান । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ হচ্ছে H2O Maser (Astrophysical Maser) নিঃসরণের উৎস এবং অনুমান করা হয়, ছায়াপথটি অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথের দিকে অগ্রসর হচ্ছে । ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে হাইড্রোজেন গ্যাসের একটি অগোছালো স্রোত (Clumpy stream of hydrogen gas) ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের সাথে অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথকে যুক্ত করার প্রমাণ পাওয়া যায় । মীন বামন বা The Pisces Dwarf (LGS 3) ছোট স্থানীয় গোষ্ঠীর সদস্য ছায়াপথগুলোর মধ্যে একটি এবং সূর্য থেকে ২০২২×১০৩ আলোকবর্ষ (৬২০ কিলোপারসেক) দূরে অবস্থিত । এ মীন বামন ছায়াপথটি অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথ থেকে ২০° এবং ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ থেকে ১১° দূরে অবস্থিত । যেহেতু, মীন বামন LGS 3 ছায়াপথ ঐ ছায়াপথ দুটি থেকে ৯১৩×১০৩ আলোকবর্ষ (২৮০ কিলোপারসেক) দূরত্বে অবস্থিত, হয়তো এটি অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথ কিংবা ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের একটি উপগ্রহ ছায়াপথ হতে পারে । মীন বামন LGS 3 ছায়াপথের মূল ব্যাসার্ধ ৪৮৩ আলোকবর্ষ (১৪৮ কিলোপারসেক) এবং ২.৬×১০৭ সৌর ভর রয়েছে । মীন VII/Triangulum (Tri) III ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের আরেকটি উপগ্রহ হতে পারে ।
ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী Gérard de Vaucouleur ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথকে SA(s)cd ধরণ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেন । ট্রায়াঙ্গুলাম একটি চাকতি আকৃতির ছায়াপথ যার বিশিষ্ট বাহুগুলো গ্যাস এবং ধূলিকণা নিউক্লিয়াস থেকে সর্পিলাকার হয়— যে কারণে এটি সর্পিল ছায়াপথ নামে পরিচিত । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের ভিতরের অংশে দুটি আলোকিত সর্পিল বাহু রয়েছে এবং সাথে একাধিক স্ফটিক বা শক্ত খুঁটি (Spar) রয়েছে যা ভিতরের অংশকে বাইরের সর্পিল বৈশিষ্ট্যের সাথে সংযুক্ত করে । তাই, এখানে গ্যাস ও ধূলিকণা থাকার কারণে খুব দ্রুত নক্ষত্র গঠন করে ।
ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের চারপাশে একটি বর্ণবলয় (Halo) থাকতে পারে, কিন্তু নিউক্লিয়াসে কোনো স্ফীতি নেই । ট্রায়াঙ্গুলাম একটি বিচ্ছিন্ন ছায়াপথ এবং অন্যান্য ছায়াপথগুলোর সাথে সাম্প্রতিক একত্রিতকরণ বা মিথস্ক্রিয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই । এ ছায়াপথের কেন্দ্রীয় ৪′ অঞ্চলে পারমাণবিক গ্যাস দক্ষতার সাথে আণবিক গ্যাসে রূপান্তরিত হচ্ছে, যার ফলে কার্বন মনোস্কাইডের একটি শক্তিশালী বর্ণালী নির্গমন ঘটে । আশেপাশের আন্তঃনাক্ষত্রিক মাধ্যম থেকে বিশাল আণবিক মেঘ ঘনীভূত হওয়ার কারণে এ প্রভাবটি ঘটে থাকে । কেন্দ্রীয় ৪′ এর বাইরে অনুরূপ প্রক্রিয়া চলছে, তবে কম কার্যকর গতিতে । এ ছায়াপথে শতকরা প্রায় ১০ ভাগ গ্যাসের উপাদান আণবিক আকারে রয়েছে । নক্ষত্র গঠন এমন একটি হারে ঘটছে যা স্থানীয় গ্যাসের ঘনত্বের সাথে দৃঢ়ভাবে সম্পর্কযুক্ত এবং প্রতি একক অঞ্চলের হার প্রতিবেশী অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথের চেয়ে বেশি । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথে নক্ষত্র গঠনের হার প্রায় ৩.৪ Gyr−১ pc−২, অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথে ০.৭৪ এর তুলনায় । তবে এটি অনিশ্চিত যে, এ নেট হার বর্তমানে কমছে না-কি স্থির আছে । ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথে একটি গ্রহনকারী বাইনারি নক্ষত্র (Eclipsing Binary Star) আবিষ্কার করেন ।
স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপ থেকে অবলোহিত পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দের হিসেব অনুযায়ী ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের মধ্যে ২৪ μm নির্গমনের মোট ৫১৫ বিচ্ছিন্ন প্রার্থী উৎস তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ৷ উজ্জ্বল উৎসগুলো ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে এবং সর্পিল বাহু বরাবর রয়েছে ৷ নির্গমনের অনেক উৎসই নক্ষত্র গঠনের সবচেয়ে উজ্জ্বল ও বৃহত্তম H II অঞ্চলের সাথে যুক্ত । চারটি উজ্জ্বল HII অঞ্চলকে NGC 588, NGC 592, NGC 595 এবং NGC 604 হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে । এ অঞ্চলগুলো (১.২-৪) ×১০৫ সৌর ভরযুক্ত আণবিক মেঘের সাথে যুক্ত । এ সকল অঞ্চলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল হচ্ছে NGC 604, যা প্রায় তিন মিলিয়ন বছর আগে নক্ষত্র গঠনের একটি বিচ্ছিন্ন বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে হয়ে থাকতে পারে । এ নীহারিকা হচ্ছে স্থানীয় গোষ্ঠীর ছায়াপথের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক আলোকিত HII অঞ্চল, সূর্যের আলোর (৪.৫ ± ১.৫)×১০৭ গুণ বেশি । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথের অন্যান্য বিশিষ্ট HII অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে IC 132, IC 133 এবং IK 53 । ছায়াপথের উত্তরের প্রধান সর্পিল বাহুতে চারটি বড় HII অঞ্চল রয়েছে, যেখানে দক্ষিণ বাহুতে তরুণ ও উষ্ণ নক্ষত্রের ঘনত্ব বেশি । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথে অতিনবতারা (Supernova) বিস্ফোরণের আনুমানিক হার হচ্ছে ০.০৬ ধরণের Ia এবং ০.৬২ ধরণের Ib/ধরণ II প্রতি শতকে । এটি গড়ে প্রতি ১৪৭ বছরে একটি অতিনবতারা বিস্ফোরণের সমান । ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের হিসেব অনুযায়ী, ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথে মোট ১০০টি অতিনবতারার অবশিষ্টাংশ সনাক্ত করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই সর্পিল ছায়াপথের দক্ষিণ অর্ধেকের মধ্যে অবস্থিত । H I ও H II অঞ্চলগুলোর জন্য অনুরূপ অসামঞ্জস্য এবং বিশাল O (O V) ধরণের প্রধান নক্ষত্রগুলোর উচ্চ আলোকিত ঘনত্ব রয়েছে । এ বৈশিষ্ট্যগুলোর বিতরণ কেন্দ্রটি দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় দুই আর্ক মিনিট Offset হয় । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথ একটি স্থানীয় ছায়াপথ হওয়ায় Central Bureau for Astronomical Telegrams (CBAT) বিস্ময়কর M31 এবং M81 ছায়াপথে নোভা (Novae) চিহ্নিত করে । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথে প্রায় ৫৪টি Globular cluster সনাক্ত করা হয়েছে । তবে, স্তবকের প্রকৃত সংখ্যা ১২২ বা তারও বেশি হতে পারে । নিশ্চিত হওয়া স্তবকগুলো আকাশগঙ্গা ছায়াপথের Globular cluster এর চেয়ে কয়েক বিলিয়ন বছর তরুণ বা ছোট হতে পারে এবং স্তবক গঠন গত ১০০ মিলিয়ন বছরে বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে । এ বৃদ্ধি ছায়াপথের কেন্দ্রে গ্যাস প্রবাহের সাথে সম্পর্কযুক্ত । ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথে বিশাল নক্ষত্রের অতিবেগুনী নিঃসরণ বা নির্গমন Large Magellanic Cloud এর অনুরূপ নক্ষত্রের স্তরের সাথে মিলিত । ধারণা করা হয়, ট্রায়াঙ্গুলাম ছায়াপথটি নিরপেক্ষ হাইড্রোজেন এবং নক্ষত্রের বিভিন্ন প্রবাহ দ্বারা M31 ছায়াপথের সাথে যুক্ত, যা পরামর্শ দেয় যে এ দুটি ছায়াপথের মধ্যে একটি অতীত মিথস্ক্রিয়া ২ থেকে ৮ বিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল এবং ভবিষ্যতে ২.৫ বিলিয়ন বছর আরো সহিংস সংঘর্ষ ঘটবে ।
ছবি: @astrobackyard, Beyond The World
উৎস: উইকিপিডিয়া, Albert Einstein: Science & Astronomy ।